সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন ইন্টারনেট জগতের একটা বড় অবদান। সাচ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন একটা বড় জায়গা ডিজিটাল মার্কেটিং। এর জগতে সার্চ ইঞ্জন অপটিমাইজেশন জানার আগে আমাদের জানতে হবে ডিজিটাল মার্কেটিং কি জিনিস?
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং হলো যোগাযোগ মাধ্যমের সকল প্রকার আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে ইন্টারনেটের সুবিধা ব্যবহার করে কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানো। ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক ধরণ ও প্রকারভেদ রয়েছে এবং তা নির্ভর করে কোন ধরণের প্রচারণার জন্য এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। উপরের কথা মতো যে কেবল ব্যবসার প্রসারের জন্যই মার্কেটিং করতে হয় তা কিন্তু না।
ইন্টারনেট বা যেকোনো ধরণের ডিজিটাল যোগাযোগ এর মাধ্যম ব্যবহার করে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্র্যান্ডের প্রচার চালানোকে বলা হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েব-ভিত্তিক বিজ্ঞাপন এর পাশাপাশি এসএমএস, অডিও মার্কেটিং চ্যানেল, ইত্যাদিও অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ যে মার্কেটিং ক্যাম্পেইনে ডিজিটাল যোগাযোগ অন্তর্ভুক্ত, সেটিই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ
সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশান একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট বা ওয়েবপৃষ্ঠাকে অনুসন্ধান বা সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান ফলাফলের তালিকায় প্রথম দিকে দেখানোর চেষ্টা করা।
ধরো তুমি একটি অনলাইন বইয়ের দোকান চালু করতে চাচ্ছো। মানুষজন বই অর্ডার করলে তোমার দোকান থেকে সেটি হোম ডেলিভারি দেয়া হবে। এখন কেউ তোমার দোকানের ব্যাপারে জানে না। কিন্তু কারো যদি অনলাইনে বই কেনার দরকার পরে, তখন সে গুগল মামাকে জিজ্ঞাসা করবে “Online Book Shops in Bangladesh.” গুগল মামাও সুন্দর মতো বর্তমান বুকশপগুলোর ব্যাপারে তাকে বলে দিবে।
নতুন দোকানের মালিক হিসেবে গুগল তোমাকে নাও চিনতে পারে। তাই গুগল হয়তো তোমাকে প্রথম পেইজে দেখালো না। এখন SEO হলো এমন একটি পদ্ধতি যা গুগলকে বাধ্য করে, তোমাকে সার্চের প্রথম পেইজে নিয়ে আসতে। এজন্য ওয়েবসাইট ডেভলপ করার সময় বেশ কিছু কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। আবার গুগলকে পে করলে সে নিজেই তোমাকে প্রথম পেইজে নিয়ে আসবে। সেটিকে আবার বলে SEM বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। এছাড়াও SEO এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গেলে অনেক মজার মজার তথ্য পাবে।
SEO কেন প্রয়োজন?
- সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে বেশি কার্যকর পদ্ধতি কারণ এর মাধ্যমে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সরা খুব সহজেই আপনার কন্টেন্ট খুঁজে পাবে।
- কোনো প্রকার পেইড মার্কেটিং ছাড়া অল্প সময়ে অনেক অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যায়।
- কোনো প্র্রকার পেইড প্রোমোশন ছাড়াই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো যায়।
- লম্বা সময়ের জন্য ব্যবসাকে লাভজনক করতে সহায়তা কর।
SEO কীভাবে কাজ করে?
- লিঙ্ক: এসইও করার সবচেয়ে শক্তিশালী টেকনিক হলো লিংক বিল্ডিং। এক ওয়েবসাইটের লিংক থেকে আরেক ওয়েবসাইটে যাওয়া আপনার এসইও র্যাঙ্ক বৃদ্ধি করে। কোন বাক্তি যদি এসে আপনার মেনশন করা আরেকটা লিংকে ক্লিক করে, তাহলে সেটা অফ SEO পেজ হয়ে গেলো। যে লেখায় যত বেশি র্যাঙ্ক করা ওয়েবসাইটের লিঙ্ক মেনশন করা হয়, সেসব পেজ সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে থাকে।
- কন্টেন্ট: সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে কন্টেন্ট বলতে সাধারণত ব্লগকে বোঝানো হয়। আপনার ব্লগ যদি কীওয়ার্ড সমৃদ্ধ হয় তাহলে খুব সহজেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা যাবে। আর কীওয়ার্ড রিসার্চ হলো, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) -এর একটি এমন গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ভাগ। যেখানে জনপ্রিয় এবং সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে অধিক পরিমাণে সার্চ হওয়া keywords এবং key phrase খুঁজে বের করা হয়।
- পেজ স্ট্রাকচার: এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইটের যে কোনো পেজ অপটিমাইজ করে বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর পাওয়া যায়। এটিকে অপটিমাইজ করতে আমরা ওয়েবপেজ ও এইচটিএমএল সোর্স কোড ব্যবহার করে থাকি। এটাকে অন পেজ এসইও বলা হয়। এটা দিয়ে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ কাজ। যেমন: মেটা টাইটেল, ইউআরএল সেটআপ, মেটা ডেসক্রিপশন, ইমেজ অপটিমাইজ, ইন্টারনাল লিঙ্কিং, সাইট স্পিড, ওয়েবমাস্টার টুল সাবমিশন, ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত।
কীওয়ার্ড রিসার্চ
সঠিক কীওয়ার্ড আপনার কন্টেন্ট যথাযথভাবে তার টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেয়। যেকোনো আর্টিকেল সার্চ ইঞ্জিনে অপটিমাইজ করার সবচেয়ে প্রথম ধাপ (step) হলো কীওয়ার্ড রিসার্চ। এতে করে সাইটে দ্রুত ট্রাফিক ও ভিজিটর আসবে। কীওয়ার্ড ব্যবহার করার ৩টি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম আছে। সেগুলো হলোঃ
- আপনার কনটেন্ট এর মার্কেটিং করার জন্য যখন আপনি অডিয়েন্সকে বিচার বিশ্লেষণ করে টার্গেট কীওয়ার্ড খুঁজে বের করতে হবে। আপনার কীওয়ার্ড যেন টার্গেট অডিয়েন্সের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়।
- শুধু অডিয়েন্সই না, প্রোডাক্ট, ব্র্যান্ড ও সার্ভিসের উপর নির্ভর করেও সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখবেন, সব জনপ্রিয় কীওয়ার্ড কিন্তু সবধরনের প্রোডাক্টের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
- কীওয়ার্ড যত জনপ্রিয় হয়, তত তার র্যাঙ্ক করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ একসাথে অনেকে সেই একই কীওয়ার্ড তাদের কন্টেন্টে ব্যবহার করে থাকেন। ফলে বুঝেশুনে ভালো কোয়ালিটি মেইনটেইন করে কীওয়ার্ড ব্যবহার করা দরকার।