ড্রাইভিং লাইসেন্স খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ গাড়ি চালাতে পারা এখন একটি সফট স্কিল হিসেবে দেখা হয়। দেশে এবং দেশের বাইরে পেশাদার ড্রাইভারের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি ব্যাক্তিগত গাড়ি কিংবা মোটরসাইকেল চালনার জন্য এটি একটি আবশ্যক ডকুমেন্ট।
পূর্বে লাইসেন্স ছাড়াও অনেককে গাড়ি চালাতে দেখা গেলেও, বর্তমানে তা তূলনামূলক কম। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পাশ হওয়ার পর থেকে অন্তত মূল শহরাঞ্চলে ট্রাফিক সার্জেন্টরা দায়িত্ব পালনে বেশ সচেতন।
সাধারণত দুই ধরণের লাইসেন্স করা হয়, পেশাদার এবং অপেশাদার। চারটি ক্যাটাগরিতে লাইসেন্স করা হয়, মোটরসাইকেল, হাল্কা গাড়ি, মাঝারি, এবং ভারী গাড়ি। ব্যাক্তিগত প্রয়োজনে আবেদন করলে সাধারণত মোটরসাইকেল + হাল্কা গাড়ি সিলেক্ট করে আবেদন করা হয়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন ফরম
অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করতে গেলে প্রথমে আপনাকে অবশ্যই অনলাইনে লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি পেমেন্ট করে লার্নার ফরম পূরণ করতে হবে। লার্নার কার্ড বা শিক্ষানবিশ অনুমতি পত্র নিয়ে আপনি ড্রাইভিং প্র্যাকটিস করতে থাকবেন। এই আবেদন পত্রেই (সাধারণত ২ মাস পর) পরীক্ষার তারিখ দেয়া থাকবে। সেই তারিখে নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে লিখিত, মৌখিক এবং ব্যাবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই আপনি স্থায়ী লাইসেন্স পাবেন।
পরীক্ষার প্রস্তুতি
অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকেন। কিন্তু এটি খুব কঠিন কিছু না। সাধারণ ট্রাফিক রুলস, যা আপনি অনলাইনে সার্চ দিয়ে সহজেই জানতে পারবেন। ট্রাফিক রুলসের বাইরে মোটরগাড়ির টেকনিক্যাল দুয়েকটি প্রশ্ন থাকে। ভাইবা পরীক্ষায় সাধারণত ট্রাফিক সিগনালের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। আর ব্যাবহারিক পরীক্ষায় জিগজ্যাগ বা সামান্য একটু ড্রাইভ করে দেখাতে হয়।
পরীক্ষায় পাশ করার কয়েকদিনের মধ্যেই আপনি একটি সাময়িক অনুমতি পত্র বা ডেলিভারি স্লিপ পাবেন। যেটি দিয়ে আপনি চাইলে রাস্তায় ড্রাইভ করতে পারবেন। ফিংগারপ্রিন্টের জন্য আপনার মোবাইলে এসএমএস পেলে বিআরটিএ তে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তুলে আসবেন। তখনি আপনাকে একটি প্রিন্টেড অনুমতি পত্র দেবে। স্মার্টকার্ড আসার পূর্ব পর্যন্ত এই অনুমতিপত্র দিয়ে আপনি সারা দেশের যে কোন জায়গায় ড্রাইভ করতে পারবেন।
তবে খেয়াল রাখতে হবে ডেলিভারি স্লিপ / সাময়িক অনুমতি পত্রে যে তারিখ দেয়া থাকে, সেই তারিখে যদি কার্ড না ও আসে, তবুও ডেট বাড়িয়ে আনতে হয়। অন্যথায় ট্রাফিক সার্জেন্ট মেয়াদোতীর্ণ পেপারস দেখিয়ে মামলা দিতে পারবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক
আপনি চাইলে মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে চেক করতে পারবেন। এছাড়াও বিআরটিএ এর ওয়েবসাইটে অথবা DL Checker অ্যাপ্সের মাধ্যমেও এর বর্তমান অবস্থা জানা যায়।
আবেদন করতে কি লাগে
- নূন্যতম বয়স
- নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- ছবি
- বাসার ইলেক্ট্রিক বিল / গ্যাস বিল / টেলিফোন বিলের কপি
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- ডোপ টেস্ট রিপোর্ট (পেশাদার)
- ল্যাব প্রিন্ট ছবি
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে কি গাড়ি চালানো যায়
না। লার্নার কার্ড দেয়া হয়েছে, মাঠে কিংবা জনশূন্য জায়গায় প্র্যাকটিস করার জন্য। এবং এই প্র্যাকটিসের সময়ও একজন লাইসেন্স হোল্ডার আপনার সাথে ইন্সট্রাকটর হিসেবে থাকতে হবে। লার্নার লাইসেন্স দিয়ে কোন ভাবেই রাস্তায় গাড়ি চালানো যাবে না। এই নিয়ম ভঙ্গ করলে ট্রাফিক সার্জেন্ট যে কোন সময় লাইসেন্সের মামলা দিতে পারবে।
সাধারণত ১০ বছর মেয়াদ দেয়া হয়। এই ১০ বছর পর আপনাকে নতুনভাবে পরীক্ষা দিয়ে আবার ফী পেমেন্ট করে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করে নিতে হবে।