ইউটিউব মার্কেটিং – অনলাইনে ইনকামের একটি সেরা পদ্ধতি

আপনার হাতে যদি ৬ মাস সময় থাকে, এই ৬ মাস আপনি নিজের ক্যারিয়ারের জন্য বিনিয়োগ করবেন। তাহলে ইউটিউব হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ। ইউটিউবে যদি আপনার একটি চ্যানেল থেকে এবং সেই চ্যানেলে ভালো পরিমান অডিয়েন্স থাকে, তাহলে ইউটিউব আপনাকে একটি স্মার্ট পরিমান ইনকাম দিতে পারে।

কি কি পদ্ধতিতে ইউটিউব থেকে আয় করা যায়

  • মনিটাইজেশন থেকে আয় করা যায়। আপনার ভিডিওতে গুগল বিজ্ঞাপন দেখাবে। সেখান থেকে আপনার আয় হবে। অডিয়েন্স যত বেশী, আয়ও তত বেশী।
  • স্পন্সরড এড থেকে ইনকাম। আপনার চ্যানেল যখন জনপ্রিয় হয়ে যাবে, তখন বিজ্ঞাপনদাতারা আপনার সাথে যোগাযোগ করবে ভিডিওগুলোর শুরু শেষে কিংবা মাঝে তাদের পণ্য বা সেবার প্রমোশন করে দেয়ার জন্য।
  • স্পন্সরড ভিডিও থেকে আয়। এটিও বিজ্ঞাপনি প্রতিষ্ঠান থেকে। আপনার চ্যানেলের বিষয়ের সাথে রিলেটেড কোম্পানি আপনার সাথে কন্টাক্ট করবে তাদের পছন্দমত স্ক্রিপ্ট তৈরি করে ভিডিও বানিয়ে দিতে।
  • প্রোডাক্ট রিভিউ করে ইনকাম। নামিদামি কোম্পানি গুলো তাদের প্রোডাক্ট আপনাকে দেবে তা রিভিও করে দেয়ার জন্য।
  • নিজে সরাসরি সেল করা। আপনি যখন ইউটিউবে জনপ্রিয় হবেন, তখন নিজের পণ্য বা সেবা আপনি সেল করতে পারবেন ইউটিউবে। এছাড়াও আপনি চাইলে এফিলিয়েট মার্কেটিং ও করতে পারবেন।

ইউটিউব চ্যানেল একবার পরিশ্রম করে দাড় করাতে পারলে আজীবন এখান থেকে স্মার্ট আয় করা সম্ভব। অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন, ইউটিউব মার্কেটিং এর জন্য ক্যামেরার সামনে এসে কথা বলা, এর জন্য স্টুডিও সেটাপ, দামি ক্যামেরা, লাইটিং অনেক কিছু লাগে। আসলে তা ভুল, আপনার হাতের স্মার্টফোনটি দিয়েই শুরু করতে পারেন, আপনার ইউটিউব চ্যানেল। এখন মোবাইলের ক্যামেরাই অনেক উন্নত। এক সময় আপনার চ্যানেল ফেমাস হলে, ভালো পরিমান আয় হলে আপনি তখন স্টুডিও সেটাপ করতেই পারবেন চাইলে।

ইউটিউব চ্যানেল চালাতে কি কি জানা প্রয়োজন

একটি ইউটিউব চ্যানেল ভালো ভাবে চালাতে অল্প কিছু স্কিল প্রয়োজন। যেগুলো থাকলেই আপনি নিজের চ্যানেলের সব কিছু নিজেই মেইনটেইন করতে পারবেন।

যে ইউটিউব মার্কেটিং স্কিলগুলো প্রয়োজন, সেগুলো হলো,

  • ভিডিও এডিটিং
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • ভিডিও এসইও

এতগুলো বিষয় শিখতে আলাদা আলাদা অনেক গুলো কোর্স করা প্রয়োজন হতো। কিন্তু আমাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে এই কাজগুলো আপনি সম্পূর্ণ ফ্রী তে শিখে নিতে পারবেন। সার্টিফিকেটও পেয়ে যাবেন কোর্স কমপ্লিট করার পর। আমাদের ৬ মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স লাইভ হয়েছিলো, যেটির ভিডিওগুলো আমাদের চ্যানেলে রয়েছে। এই ভিডিওগুলো দেখে আপনি ৬ মাসের কোর্সটি ২-৩ মাসে কমপ্লিট করতে পারবেন। এতে করে আপনার গ্রাফিক্স ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং এই সবগুলো বিষয় আয়ত্বে চলে আসবে।

চ্যানেল শুরু করার প্রাথমিক ধাপ

শুরুতেই আপনাকে একটি নিশ (Niche) বা বিষয় সিলেক্ট করতে হবে আপনার চ্যানেলের জন্য। সেই অনুসারে নামকরণ করে লোগো কভার ফটো ইত্যাদি তৈরি করে চ্যানেল সাজিয়ে নেবেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এর একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে রাখেন। আপনার পছন্দের বিষয়ে ভিডিও আইডিয়া নিতে পারেন গুগল সার্চ করে। তারপর স্ক্রিপ্ট লিখে ভিডিও মেক করতে পারেন ফ্রী ক্লিপ ব্যাবহার করে।

ইউটিউব মার্কেটিং সাফল্যের মাইলফলকগুলো

৪০০০ ঘন্টা আপনার ভিডিও দেখা হলে এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবার হলে আপনি প্রথম ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। তখনি একটি এডসেন্স একাউন্ট তৈরি করে আপনার চ্যানেলের সাথে কানেক্ট করে নেবেন। এডসেন্স একাউন্টে ১০ ডলার ব্যালেন্স জমা হলে আপনার বাসায় একটি চিঠি আসবে গুগল থেকে। সেই চিঠিতে পাওয়া কোড নাম্বার দিয়ে একাউন্ট ভেরিফাই করে নিতে হবে। ১০০ ডলার হলেই আপনি টাকা তুলতে পারবেন চেক / ব্যাংক ট্রান্সফার দিয়ে। আমি রিকমেন্ড করে wire transfer এর মাধ্যমে নেয়া। কারণ চেক আমাদের দেশে ভাঙ্গাতে গেলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

নতুন নতুন কনটেন্ট আইডিয়া কিভাবে জেনারেট করবেন?

  • প্রতিদিন চিন্তা করবেন আপনার অডিয়েন্সদের কি কি সমস্যা রয়েছে, যা আপনি সমাধান দিতে পারবেন?
  • তাদের কি কি জানা প্রয়োজন?
  • তারা কি কি তথ্য শুনতে এবং দেখতে ভালোবাসে?
  • ভিডিওর শুরুতে কি বললে সে পুরো ভিডিও দেখবে?
  • পুরোটা দেখার পর শেষে তার অনুভূতি হবে যে, ভালো কিছু দেখলাম

সবসময় মনে রাখবেন, ভিডিওর থাম্বনেইল দেখে একজন অডিয়েন্স সিদ্ধান্ত নেয় যে ভিডিও দেখবে কি না। তাই থাম্বনেইল আকর্ষণীয় হওয়া চাই। ভিডিওর প্রথম কয়েক সেকেন্ড প্লে করেই সিদ্ধান্ত নেয় যে পুরো ভিডিও দেখবে নাকি ক্লোজ করে দেবে। তাই প্রথম ৩ সেকেন্ড থেকে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে আকর্ষণীয় কিছু কথা, কিছু দৃশ্য থাকা জরুরী। ভিডিওর শেষ দিকে এসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দেখানো প্রয়োজন, যেন পুরো ভিডিও দেখে শেষ পর্যায়ে এসে তার মনে না হয় যে ভিডিওটি দেখে লস হয়ে গেলো। ভিডিওর লাস্টে এসে ভালো অনুভূতি হলে সাবস্ক্রাইব করার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। চেষ্টা করতে হবে সকল ভিডিও ৩-৪ মিনিটের মধ্যে রাখা এবং ১ মিনিটের কম দীর্ঘের YouTube Shorts ভিডিও তৈরি করা। কারণ এখন সকলের ধৈর্য কম, তাই দীর্ঘ ভিডিও দেখার আগ্রহ পায় না কেউই।

আশা করছি এই বিষয়গুলো ফলো করে আপনি ইউটিউব মার্কেটিং করে আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল গ্রো করতে পারবেন। এরপরও কোন প্রবলেম থাকলে, যে কোন সময় আমাদের ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করতে পারেন, আশা করি সাপোর্ট পাবেন। ধন্যবাদ।